শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন

প্রাণের সজীবতার সন্ধানে

মো.আবীর আল-নাহিয়ান:: / ১৮০ শেয়ার
আপডেট : শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১:৩৬ পূর্বাহ্ন

মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে মানুষ নানারকম কাজ করে থাকে,সে কাজ যদি হয় ভ্রমণ তাহলে তো কথাই নেই। 

দীর্ঘ দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় জীবন অনেকটা নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছিলো,হয়নি বন্ধুদের আড্ডা,ট্যুর কিছুই। তাই যান্ত্রিকতা ছেড়ে মনকে প্রফুল্ল করার উদ্দেশ্য আমরা ছুটে গিয়েছিলাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম পর্যটন জাফলং ।

০২ ফেব্রুয়ারী তারিখে দেশের সীমান্তবর্তী জনপদ জকিগঞ্জ উপজেলা থেকে মাইক্রোবাস দিয়ে আমরা লতিফিয়ান্সরা শিক্ষা সফরের জন্য রওয়ানা হয়েছিলাম,গোয়াইনঘাট উপজেলার খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং এর দিকে।যেহেতু আকাশ বারবার রঙ বদলাচ্ছিলো তাই উদ্বেগে ছিলাম বৃষ্টি নিয়ে,যাক জাফলংয়ের আকাশ রৌদ্রজ্জল-ই ছিলো। আমরা গিয়েছিলাম সিলেট-তামাবিল রোড হয়ে। ভ্রমণে আমার সাথী ছিলেন বন্ধু জাবের,কামরান,আরাফাত,হৃদয়,নয়ন,আবির,সুলেমান,সুমন,রিফাত,জাহাঙ্গীররা। রাস্তায় অনেকক্ষণ জ্যামে বসে থাকতে হয়েছে আমাদের।এটা বেশ বিরক্তিকর ছিলো।সারি সারি পর্বতমালা,নদীতে নীল জলরাশি,পাহাড়ি ভূমি সহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য,মানুষের জীবনযাত্রা দেখতে দেখতে মাইক্রোবাসে করে আমরা এগুতে থাকলাম।দেখলাম কৃষকেরা বোরো ধান রোপন করছেন।দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চড়ে আমরা পৌছলাম জাফলং এ।প্রবেশটিকেট কেটে বেশ কয়েকধাপ সিড়ি বেয়ে আমরা আমরা এলাম পাথর এবং স্বচ্ছ জলের কাছে।সেখানে একজন ফটোগ্রাফারকে ঠিক করে নিলাম।ছোট বড় পাথর ও স্বচ্ছ জল রাশিতে ছবি তুলাও হলো। প্রিয়জনদের সাথে আনন্দ করলে হৃদয়ে প্রশান্তি পাওয়া যায়। সবুজে আচ্ছাদিত পাহাড়,পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ জলের নয়নাভিরাম দৃশ্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ। আমরাও তার ব্যাতিক্রম নই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নিজেকে সোপর্দ করে আমরা প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিলাম। নির্জীবতা সরে গিয়ে হৃদয়ে এক অদ্ভুত সজীবতার সঞ্চার হলো!গাইতে ইচ্ছে করলো ‘এমন দেশটি কোথাও খুজেঁ পাবে নাকো তুমি,সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি’।

মনে হয়েছে জীবননান্দ দাসের ‘বাংলার রুপ আমি দেখিয়াছি আমি’ কবিতাটির কথা।সত্যিই কত সুন্দর আমাদের প্রাণের জন্মভূমি।প্রকৃতির সব সৌন্দর্য দিয়ে যেন আমাদের দেশকে সাজানো হয়েছে।

জাফলং ভ্রমণ শেষ করে আমরা গাড়িতে চড়লাম শ্রীপুর পার্কের দিকে।সেখানে নেমে সবুজ কোলাহলমুক্ত পরিবেশে আমরা খাবার খেলাম।বিকেল রক্তিম আভা পাহাড় থেকে দেখলাম। সেখানে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি শেষে,সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকন করতে করতে ফেরার পথে আমরা। তখন পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘দেশ’ কবিতাটির উপলব্ধি এসেছে মনে।রাস্তার দুপাশে বিস্তৃর্ণ মাঠে কোথাও গরু চড়ে বেড়াচ্ছে, কোথাও শিশুরা খেলছে। আহ!কত সুন্দর দৃশ্য।পথিমধ্যে শীতের রাতে চা-চক্র শেষে আমরা ফিরলাম নিজের নীড়ে।

শিক্ষা সফর শুধু ঘুরাঘুরি-ই নয়,মানসিক শান্তি,জ্ঞান বিকাশ ও শিক্ষা লাভের অনন্য পন্থা। এই যে নির্মল পরিবেশে ভ্রমণ করলাম,এমন কোলাহলমুক্ত প্রকৃতির বুকে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে বারেবার। 

জাফলং নিউজ/ডেস্ক 


আরও পড়ুন