মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লংলা রেলস্টেশন মাস্টারের সংকটে দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ওই স্টেশনের দায়িত্বরত একমাত্র স্টেশন মাস্টারকে লংলা থেকে গত দুই মাস আগে সিলেটের মোগলাবাজার স্টেশনে বদলি করে নেওয়ায় স্টেশনটি বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে ক্রসিং বিড়ম্বনায় পড়েছে সিলেট-ঢাকা ও চট্রগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনসহ যাত্রীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলওয়ে সেকশনের অন্যতম লংলা স্টেশনটি জনমানবহীন নিরবে-নিভৃতে দাঁড়িয়ে আছে। নেই কোনো কোলাহল বা যাত্রী। নেই হকারদের ব্যস্ততাও। গত দুই মাস আগে স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার রজত রায়কে সিলেটের মোগলাবাজার রেল স্টেশনে বদলি করে দেওয়ায় স্টেশনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
লংলা স্টেশন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই মাস ধরে মাস্টারের অভাবে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। স্টেশন চালু থাকা অবস্থায় লোকাল মেইল ট্রেন স্টেশনে থামলে যাত্রীরা ইচ্ছেমতো মালামাল নিয়ে অনায়েসে ট্রেনে উঠানামা করতে পারতেন।
কিন্তু এখন স্টেশনটি বন্ধ থাকায় একমাত্র লোকাল মেইল ট্রেনটি মেইন লাইন দিয়ে এসেই হুইসেল দিয়ে চলে যায়। এতে অনেক যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে উঠানামা করতে গিয়ে পড়ে আহতও হন।
জানা যায়, মাস্টার চলে যাওয়ায় স্টেশনের ক্রসিং সিস্টেম বন্ধ করায় বর্তমানে ওয়ানওয়ে লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি ক্রসিং বিড়ম্বনা পড়তে হচ্ছে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে। স্টেশন চালু থাকা অবস্থায় সিলেটমুখী যেকোনো ট্রেন শমশেরনগর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসলে এবং কুলাউড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকা বা চট্রগ্রামমুখী যেকোনো ট্রেনকে মধ্যবর্তী লংলা স্টেশনে দাঁড় করিয়ে ক্রসিং দেওয়া হতো।
কিন্তু বর্তমানে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শমশেরনগর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা সিলেটমুখী যেকোনো ট্রেনকে কুলাউড়া রেলস্টেশনে অথবা কুলাউড়া রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকা বা চট্রগ্রামমুখী ট্রেনগুলোকে শমশেরনগর স্টেশনে ক্রসিং নিতে হয়। উভয় স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ২০-৩০ কি.মি.। বর্তমানে ট্রেনগুলো বিলম্বে ছাড়ার কারণে প্রতিদিনই যাত্রীদের নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সারাদেশে বর্তমানে স্টেশন মাস্টার সংকট রয়েছে উল্লেখ করে সিলেট-আখাউড়া রেলওয়ে সেকশনের পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) তৌফিকুল আজিম বলেন, সিলেট-আখাউড়া সেকশনের অনেক স্টেশন মাস্টারের অভাবে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সরকার নতুন স্টেশন মাস্টার নিয়োগ দিচ্ছে।
আশা করছি, বছরখানেকের মধ্যে মাস্টার সংকটের সমস্যা সমাধান হবে এবং বন্ধস্টেশনগুলো পুনরায় চালু করা হবে।