বিদায় নিচ্ছে শীত। গাছে গাছে সবুজ পাতা। ফসলের মাঠ সবুজে ছেয়ে আছে। মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে। নাকে ভেসে আসছে শিমুল ফুলের ঘ্রাণ। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রকৃতিতে এমনি রুপ এখন। প্রকৃতিতে বইছে দখিনা বাতাস। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা। মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন। শিমুল ফুলে এখন বসন্তের হাসি।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে উঠে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। কিন্তু কালের বিবর্তনে কলমগঞ্জে ফাগুনে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্ত প্রায়। এক যুগ আগেও কমলগঞ্জ উপজেলার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায়, পতিত ভিটায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিত, এসেছে বসন্ত।
রহিমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ইলিয়াস মিয়া বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল। এখন আর দেখা যায় না। একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। তবুও এই গাছ বিলুপ্তির পথে। আগের যুগে শিমুল তুলা দিয়ে লেপ, তোশক ও বালিশ তৈরি করা হতো। কিন্তু শিমুল তুলার মূল্য বৃদ্ধিতে গার্মেন্টের জুট কাপড় দিয়ে তৈরি তুলা, পাম্পের তোশক, বালিশসহ পঞ্চ, কাপাশ তুলা আজ শিমুল তুলার স্থান দখল করে নিয়েছে। তা ছাড়া শিমুল ফল ফেটে তুলা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্থানে। তাই শিমুল গাছকে একটি বাড়তি ঝামেলা হিসেবে দেখতে শুরু করেছে গ্রাম বাংলার মানুষ।
বর্তমানে শিমুল তুলা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, আর গার্মেন্টের জুট দিয়ে তৈরি তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাপাশ তুলা ২৫০ এবং পজ্ঞের তুলা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বন ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্যিক ভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না। এটি প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলাটা খুবই ভালো এটি বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝত।