শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

ধেয়ে আসছে মোখা, আতঙ্কে অরক্ষিত উপকূলবাসী

জাফলং নিউজ ডেস্ক / ১১৫ শেয়ার
আপডেট : শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

* উত্তাল সাগর ও নদী

* বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্ক থাকছেই

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় প্রতিবছরই আঘাত হানে কোনো না কোনো ঘূর্ণিঝড়। সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান, ইয়াস, সিত্রাং এর পর এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। ঘূর্ণিঝড় আইলা, আম্পান ও সিত্রাং এর ক্ষয়-ক্ষতি এখন কাটিয়ে উঠতে পারিনি দখিণের উপকূলীয় জেলার মানুষেরা। এর মধ্যেই ধেয়ে আসছে মোখা।

এর প্রভাবে শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকে দখিনের জেলা পটুয়াখালী,বরগুনা,বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় এলাকার আকাশ রয়েছে মেঘাচ্ছন্ন। কোনো কোনো স্থানে আবার মাঝে মধ্যেই হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মোখা’র আঘাত ও নদীতে পানি বৃদ্ধির আশঙ্কায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীতীরবর্তী এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ থাকায় সামান্য ঝড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ। ভেসে যায় ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের ও গবাদি পশুসহ ঘরবাড়ি।

টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন উপকূলীয় বাসিন্দারা। কিন্তু তাদের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণে কার্যত কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারেই সীমাবদ্ধ থাকছে টেকসই বাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম। এ কারণে প্রতিবছর সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হতে হচ্ছে হাজার হাজার উপকূলবাসীকে।

সূত্রমতে, টেকসই বাঁধ না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে মেঘনা ঘেরা মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলাবাসী। পাশাপাশি কীতর্নখোলা, সুগন্ধা, সন্ধ্যা, বিষখালী, কচা, কালীগঙ্গা ও বলেশ্বর নদীর ভাঙন ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে নির্ঘুম দিন কাটাচ্ছে বরিশালের বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া, চরমোনাই, ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর, কাঠালিয়া, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও বরগুনার নদীতীরবর্তী মানুষ।

ঘূর্ণিঝড় মোখা’র খবরে নদীর তীরবর্তী এলাকার হাজারো পরিবারের দিন কাটছে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যদিয়ে। নদীর ভয়াবহ ভাঙন ও তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় ভিটে-মাটি হারানোর আশঙ্কায় তাদের মাঝে এ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দখিণের নদী ভাঙন এলাকা গুলো বেশ কয়েকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা পরির্দশন করলেও কোনো সুফল পায়নি নদী তীরের মানুষরা। জরুরি ভিত্তিত্বে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধের স্থায়ীভাবে র্র্নিমাণ ও নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন তারা।

বিশখালী নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা মোঃ লিটন সিকদার বলেন, ‘বেড়িবাঁধ হচ্ছে মোদের রক্ষাকবচ। সেই রক্ষাকবচের কারণেই মোরা এখন অরক্ষিত। পূর্ণিমা এবং অমাবস্যার জোয়ারের পানির চাপ সামলাতে পারে না বেড়িবাঁধ। সেই বেড়িবাঁধ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করবে কী করে?।’

বেতাগী বরগুনার বাসিন্দা সাংবাদকর্মী খাইলরুল ইসলাম মুন্না বলেন, বলার অপেক্ষা রাখে না, বেড়িবাঁধের বেহাল দশার কারণে আমরা ক্রমশই নিঃস্ব হতে যাচ্ছি। আমরা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছি না, যে ঘূর্ণিঝড় আসলে উপকূলবাসী কি করবে?।

এ বিষয়ে দক্ষিণাঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ড (বরিশাল বিভাগ) এর প্রধান প্রকৌশলী মজিবুর রহমান বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে আমাদের বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত কোথাও বাঁধ ভেঙে গেলে তা মেরামতের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। এছাড়াও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আমাদের কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’


আরও পড়ুন