মৌলভীবাজারের ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত কুলাউড়া উপজেলায় সচিব সংকটের কারণে ৬ ইউনিয়নের কার্যক্রম চলছে মন্তর গতিতে। ৩ জন সচিব ভাগাভাগি করে চালাচ্ছেন ৬ টি ইউনিয়ন।
দীর্ঘদিন থেকে এসব ইউনিয়নে সচিব সংকট থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ব্যাঘাত ঘঠছে পরিষদের দৈনন্দিন সরকারী কার্যক্রম। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে তিন সচিবকে। এছাড়াও ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে উপজেলার হাজিপুর, কুলাউড়া সদর ও কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদ শূন্য রয়েছে। এসব ইউনিয়নে টিলাগাঁও ইউপি সচিব তাজুল ইসলাম হাজিপুরে, জয়চন্ডি ইউপি সচিব আব্দুল বারী কুলাউড়া সদরে ও বরমচাল ইউপি সচিব রকিবুর রহমান কাদিপুর ইউনিয়নে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সরকারীভাবে এসব ইউনিয়নে শূন্য পদে সচিব নিয়োগ না হওয়ায় নাগরিক সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, মৃত্যু সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স সহ সকল জরুরী সেবা কার্যক্রমে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণের। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক যুবকরা। তারা পাসপোর্ট করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক সনদ নতুবা জন্ম নিবন্ধন কার্ড বাধ্যতামূলক নিতে হয়। কিন্তু পরিষদে গিয়ে এসব যুবকরা সচিব বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। যে সকল সচিবরা অন্য পরিষদে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সেই সচিবদের কাছে ভুক্তভোগী নাগরিকরা জরুরী প্রয়োজনে এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে গিয়ে তাদের কাছে ধরনা দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হচ্ছে।
বরমচাল ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের জাকির আহমদ, মনোয়ার আলম, হাজিপুর ইউনিয়নের ইসমাইলপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের জনতাবাজার এলাকার জুনেল আহমেদ, কাদিপুর ইউনিয়নের হেলাল আহমদ জানান, বিদেশ গমনে পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য তারা নিজ নিজ ইউনিয়ন থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে গিয়ে সচিব না থাকায় কয়েকদিন অফিস থেকে ফেরত আসতে হয়। খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন সচিব সপ্তাহে দুই-একদিন অফিসে এসে অতিরিক্ত কাজ করে যান। কখনো কখনো সচিবকে পেতে হলে তাদের মূল কর্মস্থল অন্য ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে কাজ আদায় করতে হয় ভুক্তভোগীদের।
বরমচাল ইউপি সচিব রকিবুর রহমান জানান, তাঁর মূল কর্মস্থল বরমচাল ইউনিয়ন। কিন্তু সরকারী নির্দেশনায় তাকে কাদিপুর ইউনিয়নে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে উভয় ইউনিয়নের মানুষের দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
কাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ছালাম জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাঁর ইউনিয়নে স্থায়ী সচিব না থাকায় অন্য ইউনিয়ন থেকে একজন সচিব সপ্তাহে দুই-একদিন এসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও অফিসের হিসাব-নিকাশ সহ জরুরী কাজের বিঘ্ন হচ্ছে। তিনি তাঁর ইউনিয়নে দ্রুত একজন স্থায়ী সচিব নিয়োগ দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান।
বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আহমদ খান সুইট জানান তাঁর ইউনিয়নে স্থায়ী সচিব এর প্রয়োজন। কিন্তু সচিব যিনি আছেন তিনি অন্যান্য ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করায় তাঁর ইউনিয়নে অনিয়মিত আসায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও অফিসের হিসাব-নিকাশ সহ জরুরী কাজের বিঘ্ন ঘটে। এতে করে সাধারণ মানুষের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, তাঁর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সচিব সংকট রয়েছে। তাই কয়েকটি ইউনিয়নের সচিবদের অন্য ইউনিয়নে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তবে দ্রুত শূন্য পদে সচিব নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্র:সিলেট ভয়েজ
জাফলং নিউজ/ডেস্ক/এস